সে দিনের কথা তোমাকে কখনো হয়নি বলা।
যখন আমার এই বন্ধ কক্ষে নিকষ কালো অন্ধকারে নিজের ছায়াও গিয়েছিল অন্তর্ধানে,
তখন আলোর ঝলকানি হয়ে খুলে দিয়েছিলে আমার জানালার গারদ।
খোলা জানালায় দীর্ঘ শ্বাস নিয়েছি যেন শতাব্দী পর,
জেনেছিলাম দেয়ালের ঐপাড়ে এখনো ডানা মেলে পাখি উড়ে, গান গায়।
সব হারানো বৃদ্ধ ভিখারি বটের ছায়ায় নিশ্চিন্তে ঘুমায়,
ছোট্ট শিশু খিলখিল হেসে বেড়ায় মেঠো পথে।
সে দিনের কথা তোমাকে কখনো হয়নি বলা।
সে দিন তুমি ছিলে ঠিক বরফ গলা পানির মত,
যখন গ্রীষ্মের তপ্ত দুপুরে আমার তৃষ্ণার্ত গলা শুকিয়ে কাঠ হয়েছিল।
তোমার কোমল করে বলা প্রতিটি শব্দ ছিল গালিবের কাব্যের পংক্তিমালার মত,
যখন দেয়ালে কান পেতেছিলাম একটু নীরবতা গুছানোর আশায়।
তোমার ছলছল হাসি সকল নিস্তব্ধতাকে ভরিয়ে তোলে সুখের ঝরনা ধারায়।
সে ঝরনায় অবগাহন করে, সৃজিত হয়, সম্ভিত ফিরে পায় এই তনু।
সে দিনের কথা তোমাকে কখনো হয়নি বলা।
সে দিন তুমি ছিলে দ্বীপের ভিতর এক খণ্ড সবুজ ঘাস,
যখন পথ হারিয়ে বাঁচার লড়াইয়ে দিশেহারা ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ নাবিক।
আশ্রয় পেয়েছিলাম সে দ্বীপে, যেমন আশ্রয় পায় গোধূলি বেলায় পাখি তার নীড়ে।
তোমাকে পাশে পেয়ে, নরম ঘাসের বিছানায় দু’চোখ জুড়ে ঘুম আসে,
যেন তারা ঘুমায়নি কত যুগ।
- ড. বাসার