যান্ত্রিক জীবনের একঘেয়েমি থেকে বাঁচতে মন চায় একটুখানি শান্তির পরশ। বনভোজন সেই জাদুর কাঁঠি যার পরশে ভুলা যায় ব্যস্ত জীবনের ক্লান্তি।
বছরের এই সময়টায় অস্ট্রেলিয়ায় জমে উঠে বনভোজন ঘুরাঘুরি। কিউ ইউ টি বাংলাদেশ এসোসিয়সশন উদ্যোগে গত ৩০ অক্টোবর হয়ে গেল বার্ষিক বনভোজন ও সমুদ্র ভ্রমণ। এবার বনভোজনের আয়োজন হয়েছে ব্রিসবেনের অদূরে সাগর আর পর্বতে আচ্ছাদিত প্রাকৃতিক নয়নাভিরাম কিংস বিচে। দিনব্যাপী এ বনভোজন ও সমুদ্র ভ্রমণ অনুষ্ঠিত হয়।
সবুজ পর্বত আর টলটলে নীল সাগর এই বনভোজনের আনন্দকে বাড়িয়ে দিয়েছে অনেক। পর্বতের গায়ে গজিয়ে ওঠা ঝোপঝাড়। মাটি ছেয়ে আছে সবুজ ঘাস আর বিভিন্ন লতা গুল্মে, যেন যত্ন করে ছড়িয়ে দেয়া দামি কার্পেট। এখানে-সেখানে ফুটে আছে নাম না জানা বাহারি জংলি ফুল। সাগরের পূর্ব তীরে হলুদ বুনোফুল আর রঙিনপাখা প্রজাপতির ছাড়াছড়ি। বেড়ানোর জন্য চমৎকার একটি জায়গাটা। বহুদিন পর বন্ধুবান্দব আর পরিবার নিয়ে আড্ডায় হারিয়ে যায় সবাই।
সাগরের বড় বড় ঢেউইয়ের ন্যায় সবার মনেও ছিল আনন্দের ঢেউ, উপচে পড়া আনন্দ। প্রতিদিনের গ্লানি ভুলে সবাই চলে গেছেন বহু পেছনে, জীবনের সোনালি দিনগুলোতে। খাঁচার পাখি ডানা মেলেছে নীলাকাশে। আজকে কারো হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা। ছোট ছেলে-মেয়েরাও কম গেল না। ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে চলে খেলাদুলা। সবার মাঝে উপচে পড়া উচ্ছ্বাস। তাদের কথাকলিতে চারদিক মুখরিত।
সকালে ব্রিসবেনের ক্যালভিন গ্রোভ থেকে ৫০ জন সদস্য নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হয়। তার আগে সবাইকে সকালের নাশতা পরিবেশন করা হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় বাস পৌঁছে যায় গন্তব্য স্থানে। দলবেঁধে সমুদ্র সাঁতার, বেলাভূমিতে ফুটবল খেলা চলতে থাকে। তারপর দুপুরের খাবার শেষে সবাই অবলোকন করতে থাকে কিংস বিচের প্রাকৃতিক নয়নাভিরাম সৌন্দর্য।
বিকেল ৪টায় শুরু হয় দেশীয় বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী খেলা। মনোমুগ্ধকর এ খেলা উপস্থিত সবাই মনভরে উপভোগ করেন। খেলায় বিজয়ীদের জন্য ছিল আকর্ষনীয় সব পুরষ্কার। শেষে বনভোজনে আগত সকলকে নিয়ে শুরু হয় আকর্ষণীয় র্যাফল ড্র। এতে সাতজন সৌভাগ্যবান বিজয়ী আকর্ষণীয় পুরস্কার জিতে নেন।
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হতে থাকে, আর ভ্রমন বিলাশীদের নিয়ে গাড়ি আবার চলতে শুরু করে কর্মব্যাস্ত জীবনের দিকে।